ভগবান বিরসা মুন্ডা Birsa Munda

   ভগবান বিরসা মুন্ডা


gksantali.com
বিরসা মুন্ডা


 যে সমস্ত আদিবাসী বিদ্রোহ ইংরেজদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম হলো মুন্ডা বিদ্রোহ। আর এই মুন্ডা বিদ্রোহের নেতা ছিলেন বিরসা মুন্ডা ।অধুনা ঝাড়খন্ড রাজ্যের রাচি জেলার 'উলিহাতু' গ্রামে 1875 সালে 15 ই নভেম্বর এক  আদিবাসী তথা মুন্ডা সম্প্রদায় দম্পতির কোল আলো করে যে আগ্নি বালকের জন্ম , তিনি বিরসা মুন্ডা।বাবার নাম সুগানা মান্ডি মায়ের নাম করমি।বিপ্লবী বিরসা মুন্ডার পিতা ছিলেন এক অতি দরিদ্র ক্ষেত মজুরি ।বাল্যকালে   বীরসা চলে যান মামাবাড়ি "আয়ুহাতু" , সেখানে জয়পাল নাগের পাঠশালায় লেখাপড়া শুরু হয় । এরপর বিরসা এক মাসি ছিলেন  যিনি বিরসাকে প্রচন্ড ভালোবাসতেন তিনি তার বিবাহের পর শ্বশুর বাড়ি "খতংগা"  গ্রামে যাওয়ার সময় বিরসা কে  নিয়ে যান  সঙ্গে করে।বিরসা মুন্ডা মিশনারিদের কাছ থেকে তিনি সামান্য কিছু লেখাপড়া শিখে ছিলেন ।

15 বছর বয়সে বিরসা বড়গাঁতওতে বৈষ্ণব গুরুর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন । সেই গুরুর নাম আনন্দ পাঁড়ে। আনন্দ পাঁড়ে একদিকে ধর্ম শিক্ষা দিতেন ,অন্যদিকে আবার বহিরাগত শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস যোগাতেন । তার শিক্ষা ছিল ধর্ম ও রাজনীতি মিশ্রন । কিন্তু তিনি সেখানে বেশিদিন থাকতে, পেরেন নি নিজের ধর্মে ফিরে আসেন।

এদিকে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচারকরা ইতিমধ্যে সেখানকার বেশিরভাগ পরিবারকে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করেছিলেন।

বিরসা মুন্ডা আদিবাসী মুন্ডা জনগোষ্ঠীর জমিদারি মিশনারি এবং ব্রিটিশ শাসকদের শোষণ-নিপীড়নের এবংজিম্মীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আন্দোলন করেন ,এবং মুন্ডার জনগোষ্ঠীর লোকজন বিরসার নতুন ধর্মমন্তে বিক্ষাত হয়ে "বিরসাইত"  নামে পরিচিত লাভ করেন। বিরসা অনুগামিরা  সবাই বিরসাইত নামে পরিচিত হন। 1899 সালে 28ডিসেম্বর বিরসা মুন্ডা তার সাথীদের নিয়ে প্রথমে আক্রমণ করেন মিশনগুলোতে, এবং আগুন জ্বালায়ে দেন 6 পুলিশ স্টেশন এবং সমস্ত এলাকায়। এই সময় বেশ কিছু ইংরেজ সাহেব, মিশনার, পুলিশ, চৌকিদারি আহত ও নিহত হন। বিরসা মুন্ডার এই আক্রমণ দেখে ইংরেজরা নড়েচড়ে বসে এবং বিরসা বিদ্রোহ দমনের জন্য সাঁড়াশি অভিযান চালান। বিরসা মুন্ডা কিছুদিন নিজে আত্মগোপন করেন। 1900 সালে 13 ফেব্রুয়ারি বিরসা তখন ঘুমাচ্ছিলেন এমন সময় তাঁর সহকর্মী  সাতজন বিশ্বাসঘাতক তাকে ধরিয়ে দেয় ইংরেজ বাহিনীর হাতে  এবং বিচারে তার ফাঁসির হুকুম হয়।কাঁদতে কাঁদতে মুন্ডারা ছুটে আসে তাদের ভগবান কে দেখতে।

বিরসা জানিয়ে দেন - আবার ফিরে আসবো আমি। আবার জ্বালাব আগুন।

কিন্তু বিরসা মুন্ডা কে ফাঁসির আগের দিন 1900 সালে  9  জুন রাচি জেল এর অভ্যন্তরে খাদ্যে বিষ প্রয়োগ করে বিরসার মৃত্যু ঘটে। কিন্তু বিরসার মৃত্যু নিয়ে এও কথিত আছে যে তিনি কলেরায় মারা গেছেন।


বিরসা মুন্ডা ডাক টিকিট চালু হয় - 15 NOV 1988 , Denomination :- 60np



তথ্যসূত্র 

বিরসা মুন্ডার উলগুলান - মহাশ্বেতা দেবী

অরণ্যের অধিকার - মহাশ্বেতা দেবী।

0/Post a Comment/Comments