স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী গলায় মালা পরানোর শাস্তি আজও ভোগ করছেন সাঁওতাল মেয়ে বুধনি

 স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী গলায় মালা পরানোর শাস্তি আজও ভোগ করছেন সাঁওতাল মেয়ে  বুধনি


তবে তাঁকে দীর্ঘ ৬০ বছর পরেও কেউ ক্ষমা করেনি। সমাজ তাঁকে আজও আপন করেনি , অপরাধ শুধু এটাই  সাঁওতাল মেয়ে হয়ে বাইরের একটা লোকের   গলায় মালা দেওয়া । আর সেই বাইরের লোকটা হলেন ,  তৎকালিন ভারতের  প্রধানমন্ত্রী  জওহর লাল নেহেরু । 

সময়টা ছিল  ৬ ডিসেম্বর ১৯৫৯ সাল। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের   উদ্যোগে  ওই দিন পাঞ্চেত বাঁধ  উদ্বোধন করা হয়  এবং  উদ্বোধনের জন্য  তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী  কে স্বাগত জানানের  সিধান্ত  নেওয়া হয় কিন্তু প্রশ্ন হলো স্বাগত জানাবে কে ?  


দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন  কর্তাদের সিধান্ত অনুয়ায়ি ; দায়িত্ব এসে পড়লো  সাঁওতাল রাবন মাঝির ১৫ বছরের মেয়ে বুধনির উপর ।  পাঞ্চেত ড্যামের উদ্বোধনের   জন্য উপস্থিত নেহেরুর গলায় মালা পরিয়ে স্বাগত জানানেল বুধনি।

 নেহেরু খুশি হয়ে বাঁধ উদ্বোধন করালেন বুধনির হাত দিয়ে । বুধনির হাতেই উদ্বোধন  হল পাঞ্চেত  ড্যামের । নেহেরুর গলায় মালা  পরানের এই অপরাধের জন্য তাঁকে সমাজ বহিস্কার  করা হয় বা সাওতাল সমাজ  ত্যাগ করতে বাধ্য  করা হয় ।  কারন সাঁওতালদের এক কুমারী মেয়ে হয়ে বাইরে থেকে আসা সাদা চামড়ার মানুষের গলায় মালা পরানোর অপরাধে শাস্তি পেতে হয়েছিল বুধনিকে। কারণ এতে নাকি তিনি জহরলাল নেহেরুর স্ত্রী হয়ে গিয়েছিলেন। যদিও নেহেরু তাকে স্ত্রীর সম্মান দেননি।  এই  ১৫ বছর ছোটো মেয়েটীর জীবনে নেমে এসে  গাড় অন্ধকার। নানা কষ্টের মধ্যে  জীবন কাটাতে হয় ।  ১৯৮৪ সালে এই খবর এসে পোঁছায় তৎকালিন প্রধান মন্ত্রী রাজীব গান্ধির কাছে । বুধনি কে সাহায্য করার জন্য তিনি এসেছিলেন এবং ডিভিসি -র চাকরিতে  পুনরায় বহাল করালেন। 


অনেক বছর পর মুম্বাইয়ের একজন পরিচালক বুধনির  সঙ্গে দেখা করে তার নামে বায়োপিক বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি বুধনি। যে সমাজ  তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে সে সমাজের নিয়ম পরে কিছুটা শিথিল হলেও তিনি নিজেকে সমাজের অংশীদার করেননি। আত্বীয়স্বজনদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে একপ্রকার নির্বাসনের জীবন যাপন করছেন। তার এই লড়াই আজও শেষ হয়নি।


1/Post a Comment/Comments

  1. This comment has been removed by a blog administrator.

    ReplyDelete

Post a Comment